রবিবার, ১২ মার্চ, ২০১৭

উট পাখির জীবন চক্র: পর্ব-৩



উট পাখির জীবন চক্রের ধারাবাহিক আলোচনা আজ আমরা উপস্থাপন করবো করবো তৃতীয় পর্ব।দ্বিতীয় পর্বে আমরা আলোচনা করেছিলাম ডিমে তা দেওয়া পর্যন্ত, ডিমে তা দেওয়া সম্পন্ন হলে ডিম ফুটে ছানা বের হবার পালা।

ডিমের খোলশ অনেক শক্ত ও পুরূ হয়, ডিম থেকে বাচ্চাগুলো বের হতে ঠোটে আর পা দিয়ে ডিমের প্রচিরে অনবরত আঘাত করতে থাকে, পরে এক সময় প্রচির ভেঙ্গে বাচ্চা গুলো্ একের পর এক বের হয় , আনেক সময় মা পাখি খোলশ ভেঙ্গে ছানাদের বের হয়ে আসতে সাহায্রে করে।তখন তারা অনেক ক্ষুদার্থ থাকে, প্রথম অবস্থাতে এরা ডিমের খোসার নরম প্রোটিন অংশ, তার পর ছোট পোকা, নুড়ি পাথর, ছোট গাছ খেয়ে ক্ষুদা নিবারন ও শক্তি আহরন করে, এ অবস্থায় বাবা ও মা উট পাখি শিকারী প্রানিদের ভয়ে বাচ্চাদের ণিয়ে অনেক ভয়ে ও আশংকায় থাকে। অন্যান্য শিকারী প্রানিরা বাচ্চার অস্তিত্ব টের পেলেই শুরূ হয়ে তাদের পায়তারি আর বাবা ও মা উট পাখির হয়ে এক বিশার চ্যালেন্জ, বিশেষ করে বাবা উট পাখি তখন এক রূদ্রমূর্তি ধারন করা, সারাদিনই ছানদের চারদিকে পেট্রল করতে থাকে, তারপরও ৮০ থেকে ৯০ ভাগ ছানা মারা পড়ে নানা ভাবে। বাচ্চাদের বয়স যখন ১ থেকে দেড় মাস হয় তখন পরিবারের মাঝে অনেকটা সস্তি ফিরে আসে কেননা বাচ্চাগুলো এ বয়সে বেশ দ্রূত ছুটতে পারে, এ বয়সী বাচ্চাগলোর দেহের পালকগুলো স্পাইকি তাকি বিধায় দুর থেকে সজারূর মতন মনে হয়।পুরুষ পাখি বাচ্চাদেরকে খাদ্য খাওয়ানো শেখায় এবং এদেরকে রক্ষণাবেক্ষণ করে।তখন উট পাখির ছানাগুলো নিজ পরিবার ও অন্যান্য পরিবারের সদস্যদের সাথে একসাথে চলাফেরা ও খাদ্যেগ্রহন করে, এক একটি দল প্রতিদিন ১০-১২ মাইল পর্যন্ত পায়চারী করে, দলভুক্ত থাকার কারনে এদের নিরাপত্তা নিশ্চিন্ত হয়ে থাকে।

উটপাখি শীতকালে সাধারণত জোড়াবদ্ধ বা একাকী থাকে। প্রজনন ঋতু বা অত্যন্ত শুষ্ক মৌসুমে এরা সমাজবদ্ধ ৫ থেকে ৫০টি একত্রে বিচরণ করে, এদের মধ্যে সবচেয়ে শক্তি সম্পন্ন পুরূষ পাখিটি একাধিক স্ত্রী পাখির সাথে সঙ্গম করলেও স্ত্রী পাখিদের মধ্যে সবচেয়ে উপযুক্ত পাখিটি রাণীর পদমর্যাদায় পেয়ে থাকে। এরা সাধারণত জেব্রা বা হরিণের সাথে বিচরণ করে। দিবাভাগে এরা চারণভূমিতে থাকে তবে জ্যোৎনালোকিত রাতেও এরা প্রায়শ ঘোরাঘুরি করে থাকে, এদের রয়েছে প্রখর দৃষ্টি ও শ্রবণ শক্তি যার দ্বারা এরা সিংহ বা অন্য হিংস্র প্রাণীর আগমন বহু দূর থেকেই টের পায়। হিংস্র প্রাণী কর্তৃক ধাবিত হলে এরা অত্যন্ত দ্রুত গতিতে ঘন্টায় ৭০ কিমি বা প্রায় ৪৪ মাইল বেগে দৌড়াতে পারে। পৃথিবীতে দুই পা বিশিষ্ট প্রাণীদের মধ্যে এরাই সর্বাপেক্ষা বেশি দ্রুতগ্রামী।একটি উট পা দৌড়ানোর সময় এদের দুই পাখাকে “রাডার” হিসাবে ব্যবহার করে বলে এরা দ্রুত এদের গতিপথ পরিবর্তন করতে পারে। এ সময় লম্বা এক পদক্ষেপে এরা ১০-১৫ ফিট (৩-৫ মিটার) দূরত্ব অতিক্রম করতে সক্ষম হয়। ভূমিতে বিচরণশীল প্রাণীদের মধ্যে উটপাখি হচ্ছে দ্বিতীয় দ্রুতগ্রামী প্রাণী। আক্রান্ত হলে এরা মাটিতে শুয়ে মাথা ও গলা এমনভাবে বিছিয়ে দেয় যে তখন দূর থেকে তা মাটির টিবির মতো মনে হয়। শত্রু থেকে রক্ষা পাবার জন্য এরা এদের পা ব্যবহার করে। পায়ের লাথিতে শত্রু আহত হয় এবং অনেক সময় তাদের মৃত্যুও ঘটতে পারে।

উটপাখি প্রধানত তৃণভোজী, লতা, ঘাস, দানাদার খাদ্য, ফল ও ফুল ভক্ষণ করে। অবশ্য এরা মাঝে-মধ্যে পোকা-মাকড়ও ভক্ষণ করে থাকে।

একটি পূর্ন বয়স্ক উট পাখির সাধারন বৈশিস্ঠগুলো নিচে দেখানো হল:

বৈশিস্ঠ পুরূষ উট পাখি স্ত্রী উট পাখি
বর্ন কালো ধুসর
প্রজনন ক্ষমতা বয়:প্রাপ্তি ৩০ মাস ২৪ মাস
উচ্চতা ২.৬ মিটার ২.৪ মিটার
ওজন ১৫০ কেজি ১৫০ কেজি
গতি ৭০কি:মি/ঘন্টা ৭০কি:মি/ঘন্টা
আশা করি উট পাখির জীবন চক্র আপনাদের কাছে ভালো লেগেছে, কিন্তু বলাবাহুল্য প্রকিৃতিক পরিবেশে উট পাখির বেড়ে উঠাটা যত চ্যালন্জিং খামারে বেড়ে উঠাটা 

1 টি মন্তব্য: